ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের সময়কাল
![]() |
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের সময়কাল |
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের সময়কাল, ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে ২০২৮ সালে ইনশাল্লাহ কিয়ামতের আলামত, ইমাম মাহদীর আগমন কখন হবে সেই বিষয়ে প্রতি যুগেই চলেছে অসংখ্য ভবিষ্যৎবাণী। বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং মাহদীর আগমনের ২, ১ টি আলামত মিলিয়েই প্রচার হতে থাকে অমুক সময়ে মাহদীর আবির্ভাব ঘটবে।
১। তুর্কি খিলাফত ধ্বংস
হযরত আবু কুবাইল (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, খিলাফত ধ্বংসের ১০৪ বছর পর মাহদীর উপর মানুষ ভিড় করবে। ইবনে লাহইয়া বলেন, উক্ত (খিলাফতের) হিসাবটা আজমী তথা অনারবী হিসাব মতে। আরবী হিসাব মতে নয়। - (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৬২; আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮১১)
আমরা সবাই জানি যে, তুর্কি খিলাফত আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৯২৪ সালে বিলুপ্ত করা হয়েছিল। সুতরাং ১৯২৪+১০৪ =২০২৮ সাল।
বিঃদ্রঃ- একমাত্র তুর্কি খিলাফত আজমী, অর্থাৎ অনরবী। এছাড়া চার খলিফা, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসীয় খিলাফত, ফাতেমীয় খিলাফত সবগুলোই আরবদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত।
২। ১৫ ই রমজান শুক্রবার রাতে বিকট শব্দে আওয়াজ আসবে
হযরত ফিরোজ দায়লামী রাঃ বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “কোন এক রমজানে আওয়াজ আসবে”। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের শুরুতে? নাকি মাঝামাঝি সময়ে? নাকি শেষ দিকে?’ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “না, বরং রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। ঠিক মধ্য রমজানের রাতে। শুক্রবার রাতে আকাশ থেকে একটি শব্দ আসবে। সেই শব্দের প্রচণ্ডতায় সত্তর হাজার মানুষ সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে আর সত্তর হাজার বধির হয়ে যাবে”।
- (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩১০)
সৌদি আরবের কেলেন্ডার অনুযায়ী ১৫ই রমজান শুক্রবার হয় ১৪৪৯ হিজরী বা ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৮ সাল।
৩। রমজান মাস শুরু হবে শুক্রবার
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্নিত, তিনি বলেন, কোন এক রমজানে অনেক ভূমিকম্প হবে। যে বছর শুক্রবার রাতে রমজান মাস শুরু হয়। তারপর মধ্য রমজানে ফজরের নামাজের পর আকাশ থেকে বিকট শব্দে আওয়াজ আসবে। তখন তোমরা সবাই ঘরের দরজা, জানালা সব বন্ধ করে রাখবে। আর সবাই সোবহানাল কুদ্দুস, সোবহানাল কুদ্দুস, রাব্বুনাল কুদ্দুস বলবে।
- (আল ফিতানঃ নুয়াইম বিন হাম্মাদ)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১ রমজান শুক্রবার ১৪৪৯ হিজরী বা, ২৮ জানুয়ারি ২০২৮ সাল হয়।
(বিঃ দ্রঃ হাদিস বড় হওয়ার কারনে সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি এবং কিতাবুল ফিতানের অনুবাদে শুক্রবারে রমজান মাস শুরু হবে এরকম বলা হয়নি। প্রথম রমজান ও মধ্য রমজান শুক্রবার হওয়া একটি আলামত এবং এটি শুধু ২০২০ সাল এবং ২০২৮ সালের রমজান মাসের সাথেই মিলে। ২০২০ সালের মধ্যে যেহেতু অন্যান্য আলামতগুলো ঘটার সম্ভাবনা নেই তাই ২০২৮ সালটিই একমাত্র এই আলামতের সাথে মিলে, অন্যকোন সালে নয়।)
৪। আশুরা বা, ১০ মুহাররম শনিবার হবে
ইমাম বাকির (রহঃ) বলেন, যদি দেখ আশুরার দিন বা ১০ মুহাররম শনিবার ইমাম কায়িম (মাহদী) মাকামে ইব্রাহিম ও কাবার এর মধ্যখানে দাড়িয়ে থাকেন তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার পাশেই দাড়িয়ে থাকবেন এবং মানুষকে ডাকবেন তাকে বাইয়াত দেয়ার জন্য।
- (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২৭০; গাইবাত, লেখকঃ শাইখ আত তুসী, পৃষ্ঠা ২৭৪; কাশফ উল গাম্মাহ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৫২)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ মুহাররম শনিবার ১৪৫০ হিজরী বা, ৩ জুন ২০২৮ সাল হয়।
৫। ইমাম মাহদীর নাম ধরে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর আহ্বান
হযরত আবু বাছির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু আব্দুল্লাহ আস সাদিক (হযরত জাফর সাদিক রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম? কখন আল কায়েম (ইমাম মাহদী) আবির্ভাব হবে? তিনি বললেন আহলে বাইতের (রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বংশধর) জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় (উল্লেখ) নেই। তবে ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে ৫টি বিষয় ঘটবে। যেমনঃ ১. আকাশ থেকে আহ্বান। ২. সুফিয়ানীর উত্থান। ৩. খোরাসানের বাহিনীর আত্নপ্রকাশ। ৪. নিরপরাধ মানুষকে ব্যাপক হারে হত্যা করা। ৫. (বাইদার প্রান্তে) মরুভূমিতে একটি বিশাল বাহিনী ধ্বংসে যাবে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে দুই ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে। ১. শ্বেত মৃত্যু। ২. লাল মৃত্যু। শ্বেত মৃত্যু দুর্ভিক্ষের কারনে মৃত্যু। আর লাল মৃত্যু হল তরবারি (যুদ্ধের) কারনে মৃত্যু। আর আকাশ থেকে তিনি (হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার (ইমাম মাহদীর) নাম ধরে আহ্বান করবে ২৩ ই রমজান শুক্রবার রাতে। (হাদিস বড় হওয়ায় সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি)
- (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ১১৯; বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা ১৫০, মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা ৪২৫; মুজ'আম আল হাদিস আল ইমাম আল মাহদী, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৭২)
সৌদি আরবের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ রমজান শুক্রবার (যেহেতু আরবী মাস সন্ধ্যা থেকে হিসাব করতে হয়, তাই শুক্রবার রাত ২৩ ই রমজান হবে) রাত ১৪৪৯ হিজরী বা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৮ সাল হয়।
৬। রমজান মাসে চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য গ্রহণ হবে
মুহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে আল হানাফিয়্যাহ (রহঃ) বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী থেকে দুটি বিষয় না ঘটবে, ততদিন পর্যন্ত মাহদীর আগমন হবে না। প্রথমটি হল, রমজানের প্রথম রাতে চন্দ্র গ্রহণ ও মধ্য রমজানে সূর্য গ্রহণ না ঘটে।
- (ইমাম আল আলী বিন উমর আল দারাকতুনী; আল কাউলুল মুখতাসার ফি আলামাতিল মাহদী আল মুন্তাজার, লেখকঃ- ইবনে হাজার আল হাইতামী, পৃষ্ঠা ৪৭)
১ রমজান রবিবার ১৪৪৮ হিজরী বা, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ সালে সূর্য গ্রহণ ঘটবে। এবং ১৪ রমজান শনিবার ১৪৪৮ হিজরী বা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৭ চন্দ্র গ্রহণ ঘটবে। (সূত্রঃ Wikipedia & NASA website)
বিঃ দ্রঃ ২০২৬ সালেও রমজান মাসে দুই বার চন্দ্র গ্রহণ ও সূর্য গ্রহণ হবে। অর্থাৎ এই আলামত দেখলে বুঝতে হবে তার পরেই মাহদীর আগমন হবে, এর আগে নয়। তাই এর আগে আগমন করবে যারা বলে তারা মূলত এই আলামতটি হিসাব করেনি এবং এর আগেই যারা মাহদী দাবি করে বসে আছে তারা ভণ্ড।
৭। বিখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা (রাঃ) এর উক্তি
📌 হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ১৪০০ হিজরীর ২ দশক ও ৩ দশক পর ইমাম মাহদীর আগমন হবে।
- (আসমাউল মাসালিক লিইয়াম মাহদিয়াহ মাসালিক লি কুল্লিদ দুনিইয়া বি আমরিল্লাহীল মালিক, লেখক- কালদা বিন জায়েদ, পৃষ্ঠা ২১৬)
সুতরাং ১৪০০+২০+৩০=১৪৫০ হিজরী বা ২০২৮ সাল।
৮। শাহ নিয়ামতউল্লাহ (রহঃ) এর কাসিদাহ
শাহ নিয়ামত উল্লাহ (রহঃ) এর কাসিদাহ মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভবিষ্যৎবাণী করা একটি কবিতা। কাসিদাহ লেখা হয়েছে ১১৫৮ সালে। কাসিদাহ এর (প্যারা-৫৭) বলা হয়েছে,
‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত
(ইমাম মাহাদি) দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত।
উল্লেখ যে, “কানা যাহুকা” সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ “সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত”। অর্থাৎ যখন মিথ্যার বিনাশ কাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন “ইমাম মাহদী”। উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে বাতিল ধ্বংস হবে। তাহলে বনী ইসরাইলের আয়াত ৮১+ভারতের সত্য মিথ্যার বিভক্ত বা পাকিস্তান নামে ভাগ হয়, ১৯৪৭+৮১=২০২৮ সাল। শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ ভারত ও পাকিস্তান ভাগের সময় থেকে এই হিসাবটি করে ৮১ নং আয়াত উল্লেখ করে অস্পষ্টভাবে বলে গেছেন যার ব্যাখ্যা পরে পাওয়া গেছে। এছাড়া আশ্ শাহ্রানের আগামী কথনেও সরাসরি ২০২৮ সালে আগমনের ব্যাপারে বলা হয়েছে।
৯। সুফিয়ানীর জন্ম ও উত্থান
হযরত যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন দ্বিতীয় সুফিয়ানীর জন্মের সময় আকাশে আলামত বা নিদর্শন দেখা যাবে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৫৪)
১৯৮৬ সালের ৮ই মার্চ আকাশে হেলির ধূমকেতু দেখা গিয়েছিল। সাধারণত প্রতি ৭৪ থেকে ৭৯ বছর পর পর হেলির ধূমকেতু পৃথিবীতে দৃশ্যমান হয়। অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন, যে বছর হেলির ধূমকেতু দৃশ্যমান হয়, সে বছর একটা বিখ্যাত ঘটনা ঘটে।
📌 হযরত হুজায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন খুযায়ী (রাঃ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা এই সুফিয়ানিকে কিভাবে চিনব? উত্তরে রাসুল (সাঃ) বললেন, “তার গাঁয়ে দুটি কাতওয়ানির চাদর থাকবে (দুটি শক্তিশালী দল)। তার চেহারার রং ঝলমলে তারকার মতো হবে। ডান গালে তিলক থাকবে। আর বয়স চল্লিশের কম হবে”।
- (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১১০)
সুতরাং ১৯৮৬+৪০=২০২৬ সাল। অর্থাৎ ২০২৬ সালের মধ্যেই সুফিয়ানীর উত্থান হবে। আমরা সবাই জানি ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে সিরিয়াতে সুফিয়ানীর উত্থান হবে। অর্থাৎ তার আগে মাহদীর আগমন হবে না। যেহেতু ২০২৬ সালের ব্যাপারে দলিল পাওয়া যায় যে সুফিয়ানীর উত্থান তখন হবে, তাহলে তার আগে মাহদীর আগমন কিভাবে হতে পারে? আর যারা মাহদী দাবি করতেছে বর্তমানে তারা এই সকল দলিল মতে স্পষ্ট ভণ্ড।
১০। ফোরাত নদীর তীরে সোনার পাহাড় ভেসে উঠা ও ইমাম মাহদীর খিলাফতের দায়িত্ব হস্তান্তর
সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, চতূর্থ ফিৎনা হচ্ছে, অন্ধকার অন্ধত্বপূর্ন ফিৎনা। যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় উত্তাল হয়ে আসবে, আরব অনারবের কোনো ঘর বাকি থাকবেনা, প্রত্যেক ঘরেই উক্ত ফিৎনা প্রবেশ করবে। যা দ্বারা তারা লাঞ্ছিত অপদস্ত হয়ে যাবে। যে ফিৎনাটি শাম (সিরিয়া) দেশে চক্কর দিতে থাকলেও রাত্রিযাপন করবে ইরাকে। তার হাত পা দ্বারা আরব ভুখন্ডের ভিতরে বিচরন করতে থাকবে।
উক্ত ফিৎনা এ উম্মতের সাথে চামড়ার সাথে চামড়া মিশ্রিত হওয়ার ন্যায় মিশ্রিত হয়ে যাবে। তখন বালা মুসিবত এত ব্যাপক ও মারাত্নক আকার ধারন করবে যা দ্বারা মানুষ ভালো খারাপ কিছুই নির্নয় করতে সক্ষম হবেনা। ঐ মুহুর্তে কেউ উক্ত ফিৎনা থামানোর সাহসও রাখবেনা। একদিকে একটু শান্তির সুবাতাস বইলেও অন্যদিকে তীব্র আকার ধারন করবে। মানুষ সকালে বেলা মুসলমান থাকলেও সন্ধা হতে হতে সে কাফের হয়ে যাবে। উক্ত ফিৎনা থেকে কেউ বাঁচতে পারবেন, কিন্তু শুধু ঐ লোক বাঁচতে পারে, যে সমুদ্রে ডুবন্ত ব্যক্তির ন্যায়। করুন সুরে আকুতি জানাতে থাকে।
সেটা প্রায় ১২ বৎসর পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে। এক পর্যায়ে সকলের কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ইতোমধ্যে ফোরাত নদীতে স্বর্নের একটি পাহাড় প্রকাশ পাবে। যা দখল করার জন্য সকলে যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে এবং প্রতি নয় জনের সাতজন মারা পড়বে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬৭৬)
আমরা সবাই জানি যে, চতুর্থ ফিতনা বা, সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। সেটা ১২ বছর স্থায়ী থাকবে, তারপর ফোরাত নদীর তীরে সোনার পাহাড় ভেসে উঠবে। সুতরাং ২০১১+১২=২০২৩ সাল।
উল্লেখ ফোরাত নদীর তীরে সোনার পাহাড় দখল কে কেন্দ্র করে যুদ্ধের পরপরই ইরাকের কুফা (মসূল) নগরীতে কালো পতাকাবাহী দলের উপর গণহত্যা সংগঠিত হবে। তারপরই খোরাসানের কালো পতাকাবাহী বাহিনীর আত্নপ্রকাশ হবে।
হযরত ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, খোরাসান থেকে কালো ঝান্ডাবাহী দল এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ ও মাহদী (আঃ) এর আত্নপ্রকাশ আর মাহদীর হাতে ক্ষমতা আসা বাহাত্তর মাসের (৬ বছর) মধ্যেই সংঘটিত হবে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৮০৪)
সুতরাং, ইমাম মাহদীর হাতে খিলাফতের ক্ষমতা যাবে ২০২৩+৬= ২০২৯ সাল। অর্থাৎ ২০২৯ সালের পূর্বেই মাহদীর হাতে রাজত্ব যাবে। এ থেকে এটিও পাওয়া যায় যে ২০২৩ সালের আগেও কোনভাবেই মাহদীর আগমন হতে পারে না। যারা দাবি করবে তারা মিথ্যাবাদী।
১১। পবিত্র কাবা শরীফে হত্যাকাণ্ড
১৪০০ হিজরীতে ইমাম মাহদীকে কেন্দ্র করে লোকজন জড়ো হবে।
- (রিসালাত আল খুরুজ আল মাহদী, পৃষ্ঠা ১০৮)
অর্থাৎ ১৪০০ হিজরী বা ১৯৭৯ সাল। ১৯৭৯ সালে হজ্জের সময় জুহাইমান আল কুতাইবি নামে এক ব্যক্তি তার শ্যালক কে ইমাম মাহদী হিসাবে পরিচিত করে পবিত্র কাবা শরীফ ১৫ দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। তারপর পাকিস্তান ও ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাদেরকে হত্যা করা হয়। (সূত্রঃ Wikipedia)
হযরত তাবে’ (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আশ্রয়প্রাথী আচিরেই মক্কার নিকট আশ্রয় চাইবে। কিন্তু তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে। অতপর মানুষ এক বুরহা সময় বসবাস করবে। অতঃপর আরেকজন আশ্রয় চাইবে। যদি তুমি তাকে পাও তাহলে তোমরা তাকে আক্রমন করিও না। কেননা সে ধসনেওয়ালা সৈন্যদলের একজন সৈন্য। (অর্থাৎ যারাই তাকে আক্রমণ করতে যাবে, তারাই মাটির নিচে ধ্বংসে যাবে)
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯৩৫)
এখানে এক বুরহা সময় কাল বলতে, ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন ৩৩ থেকে ৪০ বছর বা, এবং ৬০ বছরকেও বুরহা বলা যায়, তার বেশি কিছু সময়। তবে ৪০ বেশি প্রসিদ্ধ।
সুতরাং ১৯৭৯+৪০=২০১৯+আরো কিছু সময়। হতেই পারে তা ২০২৮। এছাড়াও আরো অনেক ছোটখাটো প্রমান রয়েছে ২০২৮ এর ব্যাপারে।
"কত বছর বয়সে আত্মপ্রকাশ করবেন?"
বিভিন্ন হাদিস ও সূত্র থেকে এটি জানা যায় যে ইমাম মাহদী যখন আত্মপ্রকাশ করবেন তখন তার বয়স ৪০ বছর হবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদী আলাইহিস সালাম বের হবে আর তখন সে হবে চল্লিশ বছরের এক জন ব্যক্তি। কেমন যেন সে একজন বনী ইসরাঈলের ব্যক্তি।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৬৭)
আর তাকে প্রেরণ করা হবে আর তার বয়স হবে ত্রিশ হতে চল্লিশের কোঠায়।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৭৩)
তাই যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মাহদী দাবি করতেছে বর্তমানে বা তাদের অনুসারীরা তাদের মাহদী বানিয়েছে, তাদের কাছে কি দলিল আছে সেটা যাচাই করুন। কারণ শরিয়াহ নির্ধারিত হয় কুরআন-হাদিস দ্বারা। বাতিনী ইলম বা আল্লাহ প্রদত্ত ইলম কোন সময়ই কুরআন-হাদিসের বাহিরে যেতে পারবে না। গেলেই বুঝতে হবে সেটা আল্লাহ প্রদত্ত ইলম না। চাই সেটা যে মাধ্যমেই আসুক, স্বপ্ন হোক, কাশফ হোক, আর নাহয় ইলহাম হোক।
ইলমে লাদুনি সম্পর্কে যারা ভালো জানে না তাদের জন্য এই সকল বিষয়ে জানা একান্তই জরুরী নাহলে ফিতনায় পরে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
Post a Comment